শ্রীলঙ্কা শেষটাও রাঙাতে চায়

শ্রীলঙ্কা শেষটাও রাঙাতে চায়
গত বছরের শেষে যখন ভারত থেকে ফিরেছিল শ্রীলঙ্কা, সেটি ছিল হারে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত একটি দল। নতুন বছরের শুরুতে, ত্রিদেশীয় সিরিজটা ছিল নিজেদের ফিরে পাওয়ার। যেখানে কার্যত বাংলাদেশই ছিল তাদের মূল প্রতিপক্ষ। আর চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যখন শিবির বদলে লঙ্কান ক্রিকেটের কোচ হলেন তখন সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগুনে ঘি পড়ল, শ্রীলঙ্কার চেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ালেন হাথুরু!

কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে হাথুরুকে ‘দেখিয়ে দেওয়া’-র যে রব উঠেছিল, সেটা গেল বুমেরাং হয়ে। ত্রিদেশীয় সিরিজের পর টেস্টেও কুপোকাত বাংলাদেশ। এরই মধ্যেই প্রায় অলক্ষ্য কাজের কাজটা করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ভারতে হারিয়ে আসা আত্মবিশ্বাস যেন ফিরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ! এবার আবার দেশে ফেরার পালা। ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা আর টেস্ট সিরিজ জিতে জমানো আত্মবিশ্বাসের ভাড়ারটা কানায় কানায় পূর্ণ করেই দেশে ফিরতে চায় তারা। কাল মিরপুরে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ওপেনার উপুল থারাঙ্গা বলেই ফেললেন, ‘ওয়ানডে আর টেস্টে জিতে ছন্দে আছি আমরা। আত্মবিশ্বাসটা এখন সত্যিই উঁচুতে। দলের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ এই সিরিজ। আমরা শেষ দেড়-দুই বছর ধরে নিয়মিত ভালো করতে পারিনি। এই সিরিজের শেষটাও ভালো হবে আশা করি।’ রীতি অনুযায়ী অবশ্য ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে থাকার কথা ছিল লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমালের। কিন্তু রীতি-নীতি প্রতিনিয়ত ছুড়ে ফেলতে অভ্যস্ত যিনি, সেই হাথুরুসিংহে পাঠালেন থারাঙ্গাকে। বলার কারণ কী সেটা কদিন পেছনে ফিরলেই বোঝা যাবে। চট্টগ্রাম টেস্টে পরপর দুদিন ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবীরাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন লঙ্কান ‘মাস্টারমাইন্ড’। কাল থারাঙ্গাকে পাঠানোর লক্ষ্য কী তা যদিও স্পষ্ট নয়, তবে বাকি থাকা টি-টোয়েন্টি সিরিজটিতে যে ট্রফি হাত ফসকানোর কোনো সুযোগই রাখতে চান না, সেটা নিশ্চিত।
তবে লঙ্কানরা যে বিষয়ে নিশ্চিত নয়, সেটি হলো সিরিজের সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত চরিত্র ‘উইকেট’। ওয়ানডে আর টেস্টের বহুরূপী চেহারার পর আবার কী বিস্ময় নিয়ে অপেক্ষায় মিরপুরের উইকেট, কে জানে! ধন্দ কাটছে না থারাঙ্গার, ‘কাল (আজ) পর্যন্ত (পিচ নিয়ে) নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই। আশা করছি ভালো উইকেটই হবে। ওয়ানডেতে আমরা ভিন্ন ভিন্ন উইকেট পেয়েছিলাম। প্রথম দুই ম্যাচে উইকেট ভালো ছিল, কিন্তু সিরিজের শেষ দিকে উইকেটটা ধীর হয়ে আসছিল। টেস্ট ম্যাচেও আমরা বোলিং ট্র্যাক পেয়েছিলাম। কাল (আজ) একটা ভালো উইকেট পাব বলে আশা করছি।’
উইকেট প্রশ্নের মীমাংসা তো আজ বিকেলের আগে হচ্ছে না। তাঁর আগে নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র আর রণকৌশলের ধার বাড়াতে মনোযোগী হয়েছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে হঠাৎ যে নতুনের ‘বাড়-বাড়ন্ত’ সেটাও কিন্তু থাকছে আতশ কাচের নিচেই, ‘নতুনেরা বিপিএলে ভালো করেছিল। যদি আমাদের দলের দিকে তাকান, দেখবেন আমাদেরও কিছু ক্রিকেটার বিপিএলে খেলেছিল। আমাদের একটা ধারণা আছে তারা (বাংলাদেশের নতুন ক্রিকেটার) কেমন করেছে। আমরা তাদের ভিডিও দেখে কিছু ধারণা নিয়েছি।’ লঙ্কান তাঁবুতে যদি বাংলাদেশের শক্তিমত্তার ব্যবচ্ছেদ চলে, মাহমুদউল্লাহর ক্যাম্পেও নিশ্চয়ই নিস্তরঙ্গ অবকাশ চলছে না। তবে শেহান মাদুশঙ্কার মতো কোনো গোপন বাজি যদি আবার খেলে বসেন হাথুরু, অবাক হওয়ার কি বেশি কিছু থাকবে!

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment